Header Ads

Header ADS

২১ কলেজের ভর্তি নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তুঘলকি চিন্তা

 


লাখ লাখ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা বানানো, অধিভুক্ত সরকারি কলেজগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হস্তান্তর না করে জটিলতা জিইয়ে রাখা, আত্মঘাতী একক পরীক্ষক পদ্ধতি চালু এবং টাকার বিনিময়ে কলেজ র‌্যাকিং করাসহ নানা কদাকার চালুর পর এবার নতুন ধান্দায় নেমেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এই ধান্দার নাম  বিশ্ববিদ্যালয়টির অধিভুক্ত ১৩টি শতবর্ষী কলেজ এবং আটটি প্রাক মডেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা ১৯ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গুচ্ছ পদ্ধতিতে নেয়ার উদ্যোগ। অথচ গত কয়েকবছর ধরে স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি পদ্ধতি চালু করে গৃপালিত প্রচার ও গণমাধ্যমের সহায়তায় বাহবাও কুড়িয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান চালু থাকার মধ্যেই উপাচার্য পদ খেকে অবসরে যাওয়ার মাত্র তিন মাস আগে এই উদ্যোগকে তুঘলকি কারবার হিসেবে আ্যখায়িত করে একে ‘আখেরি’ ধান্দা বলেছেন কয়েকটি কলেজের শিক্ষকরা।


জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ সম্মতি চেয়ে শিক্ষামন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালককে চিঠি দিয়েছেন।


চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের বৃহত্তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হওয়ার প্রয়োজন অনুভব করছে। প্রাথমিকভাবে এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ১৩টি শতবর্ষী কলেজ এবং আটটি প্রাক মডেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা ১৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে গুচ্ছ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমরা চিন্তাভাবনা করছি। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবশিষ্ট কলেজগুলোর ভর্তি প্রক্রিয়া পূর্বের ন্যায় এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ভিত্তিতেই সম্পন্ন হবে। জানা গেছে শতবর্ষী এই ১৩ কলেজের মধ্যে রয়েছে- রাজশাহী কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রামের হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজ, নড়াইলের ভিক্টোরিয়া কলেজ, বরিশালের ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ, সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ, পাবনার এডওয়ার্ড কলেজ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, খুলনার ব্রজলাল (বিএল) কলেজ, ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজ, রংপুরের কারমাইকেল কলেজ, বাগেরহাটের প্রফলচন্দ্র (পিসি) কলেজ ও ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ।


এছাড়া আটটি প্রাক মডেল কলেজের মধ্যে রয়েছে- ঢাকা কমার্স কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ, লালমাটিয়া মহিলা কলেজ, লালমনিরহাটের উত্তরবাংলা কলেজ, বগুড়ায় সৈয়দ আহম্মদ কলেজ, টাঙ্গাইলে সখিপুর রেসিডেন্সিয়াল মহিলা কলেজ, কুষ্টিয়ায় দৌলতপুর কলেজ ও কিশোরগঞ্জে রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজ।


জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিঠিতে আরও বলেন, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি গত বছর রাজশাহী কলেজে অনুষ্ঠিত ১৩টি শতবর্ষী কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়ন কর্মশালায় আলোচনা করা হয়েছিল। কভিড ১৯ জনিত পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।


ইউজিসির এক কর্মকর্তা অবশ্য বলছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি কলেজ ১৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় যেতে চায়। এসব কলেজে এর আগে এসএসসি ও এইচএসসির ফলের ভিত্তিতে স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ কলেজগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ভর্তি প্রক্রিয়ায় যেতে চাইলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ প্রস্তাবে সম্মত হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।


জানা যায়, এর মাধ্যমে বেসরকারি কলেজগুলো থেকে কোটি কোটি টাকা কামানোর ধান্দা। এর পেছনে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির একজন  উপ-উপাচার্য যার পিএইচডি গবেষণায় জালিয়াতির প্রমাণ মিলেছে। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ইত্তেফাক, যুগান্তর প্রথম আলোসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়েছে।


জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নতুন ধান্দা নিয়ে ইতিমধ্যে শিক্ষাবিদদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা শিগগিরই এটা নিয়ে গণমাধ্যমে তাদের মত প্রকাশ করবেন। 

No comments

Powered by Blogger.